Real Trading – রিয়েল ট্রেডিং এর পূর্বে করণীয়




Real Trading হচ্ছে, একজন ফরেক্স ট্রেডারের সর্বশেষ স্থান। ট্রেডিং শুরু করার পূর্বে আপনি যা যা শিখবেন সেটির মূল্যায়ন হবে এই রিয়েল ট্রেডিং এর মাধ্যমে। তবে এখানে একটি সমস্যা আছে। সেটি হচ্ছে, ট্রেডাররা শিখার পর্যায় থেকে রিয়েল ট্রেডিং করার মধ্যের সময়টি খুব দ্রুততার সাথে অতিক্রম করে যার কারনে ট্রেডিং সাথে সম্পৃক্ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ ছুটে যায়। ফলশ্রুতিতে, রিয়েল ট্রেডিং করার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হয়। আজকের আর্টিকেলে আমরা Real Trading শুরু করার পূর্বে করণীয় কিছু বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করবো। বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ, তাই আপনার একান্ত মনোযোগ প্রত্যাশা করছি। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

ধাপ #১ – ট্রেডিং কৌশল নির্ধারণ

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল, ওয়ার্ল্ড-কাপে অংশ নেয়ার পূর্বে কিছু অত্যাবশ্যক কাজ করে থাকে। যেমন ধরুন, একাদশ ঘোষণা করা, যেই দেশে খেলা অনুষ্ঠিত হবে সেই দেশের পিচ এবং আবাহাওয়ার উপর ভিত্তি করে দলে কয়জন পেস বোলার কিংবা কয়জন স্পিনারের প্রয়োজন হবে সেটি নির্ধারণ করে নেয়া, কোন দলে বিপক্ষে কি পজিশনে কিংবা কৌশল নির্ধারণ করতে হবে সেটি ম্যাচ (খেলা) শুরুর পূর্বেই নির্ধারণ করে নেয়া।


তাহলে এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এতোগুলো কাজ করার পিছনে কারণ কি?

ম্যাচ (খেলা) শুরু হবার পর, দল হিসাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করার মতন কোনও সময় থাকেনা। সেই কারনে খেলা শুরুর পূর্বেই সকল কৌশল নির্ধারণ করে নিতে হয় এবং খেলার সময় সেই কৌশলগুলো ব্যবহার করা হয় শুধুমাত্র!

যেমন ধরুন, যেকোনো ধরনের বোর্ড পরীক্ষায় অংশ নেয়ার আগে প্রস্তুতি হিসাবে শিক্ষার্থীদের অনেক পড়াশুনা করতে হয়।

Real Trading এর ক্ষেত্রেও একই কার্যাদি সম্পাদন করার প্রয়োজন পড়ে। আপনি যা যা শিখবেন, যেই কৌশল নির্ধারণ করবেন সেটির বাস্তবিক রূপ হচ্ছে রিয়েল ট্রেডিং। তাই রিয়েল ট্রেডিং শুরু পূর্বে ট্রেডার হিসাবে আপনার কাজ হচ্ছে সঠিক কৌশল নির্ধারণ করে নেয়া। এই কৌশল আপনাকেই খুঁজে বের করে নিতে হবে। ট্রেডার হিসাবে এক একজনের ট্রেডিং কৌশল হয় ভিন্ন ভিন্ন।

এটি মূলত নির্ভর করে, আপনি কি ধরনের ট্রেড করবেন সেটির উপর। যেমন ধরুন, অনেকেই আছেন ছোট সময়ের ট্রেড করতে পছন্দ করেন। অন্যদিকে অনেকেই আছেন অপেক্ষাকৃত বড় সময়ের ট্রেডে আগ্রহী থাকেন।

নিজের জন্য সঠিক কৌশল নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা গুরুত্বপূর্ণঃ

  • আপনি কি ধরনের ট্রেড করতে পছন্দ করেন?
  • কোন কারেন্সি পেয়ারে ট্রেড করতে পছন্দ করেন?
  • কোন সময়ে ট্রেড করতে পছন্দ করেন?
  • কোন কোন টেকনিক্যাল টুল ব্যবহার করে ট্রেড করতে পছন্দ করেন? ইত্যাদি, ইত্যাদি

রিয়েল ট্রেডিং যেকোনো ধরনের এন্ট্রি গ্রহন করার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই উপরের এই ৪টি প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করে নিতে হবে। এর মাধ্যমেই আপনি নিজের জন্য একটি পারফেক্ট ট্রেডিং কৌশল সেট করে নিতে পারবেন।

ধাপ #২ – সঠিক টাইমফ্রেম নির্বাচন

ট্রেডিং করার জন্য 1m থেকে শুরু করে 1month পর্যন্ত বেশ কিছু টাইমফ্রেম আমরা দেখতে পারি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই সবগুলো টাইমফ্রেম কিন্তু আপনার জন্য নয়! একটি ট্রেডিং চার্টকে যদি আপনি একাধিক টাইমফ্রেমে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেন তাহলে দেখতে পাবেন, কারেন্সি পেয়ারটি এক একভাবে দেখাচ্ছে। এই কারনে ট্রেডাররা সবথেকে বেশী সমস্যায় ভুগেন এবং ফলশ্রুতিতে ভুল-ভাল এন্ট্রি নিয়ে বসেন। যার করেন হয় লস!

আপনার জন্য সঠিক টাইমফ্রেম নির্বাচন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এটি আপনার ট্রেডিং এর ধরনের সাথে মিলে আপনাকে পারফেক্ট ট্রেডিং কৌশল নির্ধারণ করতে সহায়তা করবে।

ধাপ #৩ – চার্ট বিশ্লেষণ

মনে রাখবেন, Real Trading করার পূর্বে, কমপক্ষে ২০ মিনিট পূর্বে যেই কারেন্সি পেয়ারে এন্ট্রি গ্রহন করবেন সেটির অবস্থা সম্পর্কে যাচাই করে নিতে হবে।

যেমন ধরুন, ট্রেড করার জন্য আপনি GBP/USD কারেন্সি পেয়ারটি নির্বাচন করে নিলেন। এখন এই পেয়ারে এন্ট্রি গ্রহন করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে বিভিন্ন টাইমফ্রেমে কারেন্সি পেয়ারটির চার্ট দেখে নিতে হবে। সেটির ট্রেন্ড নির্ধারণ করে নিতে হবে নতুবা আপনি বুঝবেন না, কারেন্সি পেয়ারটি কি পজিশনে রয়েছে।



এই কারনে, চার্ট বিশ্লেষণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই বিশ্লেষণ করার জন্য নিচের কাজগুলো প্রয়জনিয়ঃ

  • একটি কারেন্সি পেয়ারকে একাধিক চার্টে বিশ্লেষণ করে নেয়া।
  • যেই সময়ে ট্রেড করবেন, সেই সময়ের পূর্বে ২০ মিনিটে কারেন্সি পেয়ারটির মুভমেন্ট চেক করে নেয়া।
  • প্রতি সপ্তাহের সোমবার দুপুরে (বাংলাদেশ সময়) অর্থাৎ, দুপুর ২ টার আগে কোনও কারেন্সি পেয়ারে এন্ট্রি গ্রহন করা থেকে বিরত থাকা। কেননা, সপ্তাহের শুরুর মার্কেট অপ্রত্যাশিত থাকে তাই যেকোনো দিকেই মুভ করার সম্ভাবনা থাকবে।
  • প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার রাত (বাংলাদেশ সময়) অর্থাৎ, রাত ৮টার পর নতুন করে কোনও এন্ট্রি গ্রহন করা থেকে বিরত থাকা। কেননা, শুক্রবারে এসে সাপ্তাহিক হিসাবে মার্কেট বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এই সময়ে নতুন এন্ট্রি গ্রহন করার কোনও প্রয়োজন নেই।

ধাপ #৪ – আবেগ কে দূরে রেখে বাস্তবতার ব্যবহার

ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে আবেগ কোনওভাবেই ভালো ফল প্রদান করেনা। যেমন ধরুন, কোনও একটি নির্দিষ্ট কারেন্সি পেয়ার টানা ৬০০ পিপ্স উপরে উঠে গেল। এখন আপনি চিন্তা করছেন, প্রাইস এত বেশী উপরে উঠে গেছে তাহলে এবার কিছুটা হলেও নিচের দিকে নেমে আসবে! এই চিন্তা হচ্ছে “আবেগ”।

আবগে এর মাধ্যমে কোনভাবেই মার্কেট মুভমেন্ট এবং সিচুয়েশনকে বিশ্লেষণ করা যাবেনা। মার্কেটের প্রতিটি মুভমেন্টেরই নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা রয়েছে। অর্থাৎ, কারণ রয়েছে। কারণ কিংবা Motive ছাড়া প্রাইস কোনওভাবেই মুভমেন্ট করেনা। আর সেই কারণ আপনাকে খুঁজে বের করে নিতে হবে। তাহলেই ধরে নিতে পারবেন, মার্কেটের সঠিক গতি-প্রকৃতি কোনদিকে হতে পারে।

ধাপ #৫ – টেকনিক্যাল এনালাইসিস

একটি কারেন্সি পেয়ারে কি পজিশনে এন্ট্রি গ্রহন করবেন? Buy নাকি Sell? এই সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য প্রাইসের চার্ট থেকে শুরু করে, বিভিন্ন ধরনের টেকনিক্যাল টুল ব্যবহার করার মাধ্যমে ট্রেডাররা এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করে থাকে। এই টেকনিক্যাল এনালাইসিস মূলত আপনাকে প্রাইসের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ মুভমেন্ট সম্পর্কে ধারনা প্রদান করে থাকে।

Real Trading শুরু করার আগে অর্থাৎ, কোনও এন্ট্রি গ্রহন করার আগে অবশ্যই আপনাকে সেই কারেন্সি পেয়ারের টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে নিতে হবে এবং সেই অনুসারেই আপনাকে এন্ট্রি গ্রহন করতে হবে।

Admin

Post a Comment

Previous Post Next Post